মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে ২০২০ সালের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা বাতিল হওয়ায় পরীক্ষার ফরম পূরণের আংশিক টাকা ফেরত পাচ্ছেন পরীক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার ঢাকা শিক্ষা বোর্ড থেকে শিক্ষার্থীদের এ টাকা বিতরণ শুরু হবে বলে সোমবার রাতে এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে।
মঙ্গলবার থেকে এসব অর্থের চেক শিক্ষা বোর্ডের হিসাব শাখা (১নং ভবনের ৩ তলা, কক্ষ নং-২০৮) থেকে বিতরণ করা হবে। তবে কোন অবস্থাতেই শিক্ষক ব্যতীত অন্য কাউকে চেক নেয়ার জন্য ক্ষমতা প্রদান করা যাবে না।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের সচিব অধ্যাপক তপন কুমার সরকার স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এইচএসসি পরীক্ষার ফরম ফিলাপ বাবদ জমাকৃত অর্থের চেক নিম্নে উল্লেখিত তারিখ অনুযায়ী হিসাব শাখা (১নং ভবনের ৩ তলা, কক্ষ নং-২০৮) থেকে বিতরণ করা হবে। শুধুমাত্র সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নিজে অথবা তার প্রাধিকার প্রাপ্ত কোন শিক্ষককে (স্বাক্ষর সত্যায়িতসহ) কেন্দ্রের আওতাধীন সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের উক্ত চেক অফিস চলাকালীন সময়ে গ্রহণ করার জন্য অনুরোধ করা হলো।
কোন অবস্থাতেই শিক্ষক ব্যতীত অন্য কাউকে চেক নেয়ার জন্য ক্ষমতা প্রদান করা যাবে না। কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হলে, আবেদন পত্রে গভর্নিং বডির সভাপতি/জেলা প্রশাসক/উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার প্রতিস্বাক্ষর থাকতে হবে। চেক গ্রহণের পর তাতে কোন প্রকার ভুলত্রুটি পরিলক্ষিত হলে ৭ কর্ম দিবসের মধ্যে হিসাব শাখা থেকে সংশোধন করে নিতে হবে।
এর আগে ৩১ জানুয়ারি ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের ১৫৮তম সভায় শিক্ষার্থীদের টাকা ফেরত দেওয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। ৩০ জানুয়ারি এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশের দিন খরচ না হওয়া টাকা শিক্ষার্থীদের ফেরত দেওয়ার ঘোষণা দেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
কত টাকা ফেরত পাবেন:
ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের তথ্যমতে, বিজ্ঞান বিভাগের নিয়মিত একজন শিক্ষার্থী সর্বমোট ১ হাজার ৬৫ টাকা ফেরত পাবেন। এর মধ্যে শিক্ষাবোর্ড দেবে ৪৮০ টাকা, কেন্দ্র দেবে ২২৫ টাকা। আট বিষয়ের ব্যবহারিকে ৪৫ টাকা করে মোট ৩৬০ টাকা। মানবিক ও ব্যবসা শিক্ষা শাখায় একজন নিয়মিত শিক্ষার্থী পাবেন মোট ৬২৫ টাকা।
বিভাগ ভিত্তিক হিসেবে, এইচএসসির তিনটি বিভাগে মোট ১৩টি বিষয়ে পরীক্ষা হয়। প্রতিটি পত্রের জন্য বোর্ড যে টাকা নিয়েছে সেখান থেকে প্রতিটি পত্রে ৩০ টাকা করে ফেরত দেবে শিক্ষাবোর্ড। এতে ১৩টি বিষয়ে মোট ফেরত পাবে ৩৯০ টাকা। এর সঙ্গে বিজ্ঞান বিভাগে ৯ বিষয়ে ব্যবহারিক পরীক্ষা হয়। প্রতিটি পত্রে ১০ টাকা করে মোট ৯০ টাকা ফেরত দেওয়া হবে। বিজ্ঞান বিভাগে একজন শিক্ষার্থী শিক্ষাবোর্ড থেকে ফেরত পাবে ৪৮০ টাকা।
অন্যদিকে পরীক্ষা কেন্দ্র ১৩টি বিষয়ে মোট ২০০ টাকা এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ে ব্যবহারিক খাতা থেকে ২৫ টাকাসহ মোট ফেরত দেবে ২২৫ টাকা। আর ব্যবহারিকে ৪৫ টাকা করে মোট ৩৬০ টাকা। সব মিলিয়ে বিজ্ঞানের একজন শিক্ষার্থী সর্বমোট ১ হাজার ৬৫ টাকা ফেরত পাবে।
মানবিক ও ব্যবসা বিভাগের নিয়মিত একজন শিক্ষার্থী ১৩টি বিষয়ে মোট ৩৯০, পরীক্ষা কেন্দ্র ২০০ টাকার সঙ্গে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহারিক বিষয়ে শিক্ষাবোর্ড ১০ টাকা এবং কেন্দ্র ২৫ টাকা দেবে। মোট ৬১৫ টাকা পাবেন।
সারা দেশে নয়টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড, কারিগরি শিক্ষা বোর্ড ও মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এ বছর উচ্চমাধ্যমিক ও সমমানের পরীক্ষার্থী ছিল ১৩ লাখ ৬৫ হাজার ৭৮৯ জন। এর মধ্যে নিয়মিত পরীক্ষার্থী ১০ লাখ ৭৯ হাজার ১৭১ জন আর অনিয়মিত পরীক্ষার্থী ছিল ২ লাখ ৬৬ হাজার ৫০১ জন। পরীক্ষায় অংশ নিতে শিক্ষা বোর্ডে নির্ধারিত ফি জমা দিয়ে ফরম পূরণ করতে হয় শিক্ষার্থীদের। ১৩ লাখ ৬৫ হাজার ৭৮৯ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষার ফরম পূরণ বাবদ প্রায় সাড়ে ৩০০ কোটি টাকা দিয়েছে শিক্ষা বোর্ডগুলোকে।